themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/projonmeralo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114অনলাইন ডেস্ক:
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ালো সরকার। শুক্রবার (৫ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে চুক্তিভিত্তিক এ নিয়োগের তথ্য জানানো হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে তার পূর্বের চুক্তির ধারাবাহিকতায় ও অনুরূপ শর্তে আগামী ১২ জুলাই ২০২৪ অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছর মেয়াদে বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক পদে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।
১৯৬৪ সালের ১২ জানুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা থানার শ্রীহাইল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
ব্যক্তি জীবনে তিনি বিবাহিত এবং তার চিকিৎসক স্ত্রী সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে হলিফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ, ঢাকায় কর্মরত রয়েছেন। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
তিনি ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর অষ্টম বিসিএস (পুলিশ) ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি অত্যন্ত সততা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট বিশেষ করে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স, সিআইডি, ঢাকা ও ময়মনসিংহ রেঞ্জ ও সর্বশেষ র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর গ্রেড-১ পদোন্নতি পান।
দীর্ঘ গৌরবময় চাকরিকালে তিনি ডিএমপিতে সহকারী কমিশনার, এপিবিএনের সহকারী পুলিশ সুপার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিরাজগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলায় সার্কেল এএসপি, চাঁদপুর জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ডিএমপিতে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নীলফামারী জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন।
তিনি ডিএমপিতে উপ-পুলিশ কমিশনার, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে এআইজি (সংস্থাপন) ও এআইজি (গোপনীয়) ও ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ছিলেন।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ডিআইজি (অপারেশনস) ও ডিআইজি (প্রশাসন) হিসেবে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নবগঠিত ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রথম ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পালনের গৌরবের অধিকারী। তার হাত ধরেই ময়মনসিংহ রেঞ্জের প্রশাসনিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা পায়। এরপর তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পদোন্নতি লাভের পর তিনি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) পদ অলংকৃত করেন। বাংলাদেশ পুলিশের সবচেয়ে পুরোনো ও বিশেষায়িত ইউনিট সিআইডি প্রধান (অতিরিক্ত আইজিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিআইডিতে কেন্দ্রীয় ফরেনসিক ল্যাবের পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ের ল্যাবের সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেন। ফলে মামলার আলামতের ফরেনসিক পরীক্ষা ও এক্সপার্ট ওপিনিয়ন দেয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।
এছাড়া মামলা তদন্তে পুলিশ সদস্যদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়ানো এবং তদন্তের মান বাড়াতে তিনি প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেন। এতে সিআইডির মামলা তদন্তে গুণগত পরিবর্তন সাধিত হয় ও মামলা নিষ্পত্তির হারও বৃদ্ধি পায়।
২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল বাংলাদেশ পুলিশের অ্যালিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র্যাব) মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। করোনা মহামারির সময় দায়িত্ব গ্রহণের পর তার নেতৃত্বে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে র্যাব অনবদ্য ভূমিকা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।
র্যাব মহাপরিচালক হিসেবে সহিংস উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে তার উদ্যোগে অপারেশনাল কার্যক্রমের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক পোস্টার, ব্যানার ও ডিজিটাল বিলবোর্ডে জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণা করা হয়। তার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ধর্মীয় চরমপন্থায় দীক্ষিত কিন্তু অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত হয়নি এমন ব্যক্তিদের পুনর্বাসন এবং সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে ‘নব দিগন্তের পথে’ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এছাড়া তার সময়কালে র্যাব বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গিবিরোধী অভিযান সফলভাবে পরিচালনা করে। তার নির্দেশনায় র্যাব মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার ও মাদকের বিস্তার রোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করার ক্ষেত্রে র্যাব সদস্যদের দুঃসাহসিক অপারেশনের ওপর ভিত্তি করে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ চলচ্চিত্র নির্মাণে তার অনন্য সাধারণ ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) এবং রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) এ ভূষিত হয়েছেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক সভা-সেমিনার ও প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন।
এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, লাইবেরিয়া এবং দারফুরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেশের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে আনেন।