বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর ফ্রান্সের বন্দরনগরী ক্যালের উপকূলে এ ঘটনা ঘটে বলে ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মৃতদের মধ্যে ৫ জন নারী এবং একটি ছোট্ট মেয়েও আছে। চুপসে যাওয়া ডিঙ্গির দুই শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় রাজনীতিবিদরা।
রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে ফ্রান্স ও ব্রিটেনকে পৃথক করা এই সংকীর্ণ সমুদ্রপথটিতে দুর্ঘটনায় এটিই সবচেয়ে বেশি অভিবাসন প্রত্যাশীর প্রাণহানির ঘটনা বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইংলিশ চ্যানেল বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত জাহাজ চলাচল পথ আর এখানে স্রোতও বেশ প্রবল। মানব পাচারকারীরা সাধারণত অতিরিক্ত শরণার্থী বোঝাই ডিঙ্গিগুলোকে পানিতে ভাসিয়ে দিয়ে ঢেউয়ের মর্জির ওপর ছেড়ে দেয়, আর এভাবেই ওই অভিবাসন প্রত্যাশীরা ব্রিটিশ উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করে।
স্থানীয় জেলেরা জানিয়েছেন, শান্ত সমুদ্রের সুযোগ নিতে বুধবার অন্য দিনের চেয়ে অনেক বেশি অভিবাসন প্রত্যাশী চ্যানেলটির ফ্রান্স উপকূল ছেড়ে যায়। তবে সমুদ্র শান্ত থাকলেও পানি হিমশীতল ছিল।
বুধবার ভোরে রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক ফ্রান্সের উইমোহর কাছে যুক্তরাজ্যে অভিবাসন প্রত্যাশীদের একটি দলকে বালিয়াড়ির আড়াল থেকে বের হয়ে একটি রাবারের ডিঙ্গিতে উঠ পড়তে দেখেন। এই একই দলকে কয়েক ঘণ্টা পর চ্যানেলের ৩০ কিলোমিটার জলপথ নিরাপদে পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ ইংল্যান্ডের ডানজেনেস উপকূলে নামতে দেখা যায়।
মৎসজীবী নিকোলা মারগোল রয়টার্সকে জানান, বুধবার ভোরে তিনি ছোট দুটি ডিঙ্গি দেখেছিলেন, একটির মধ্যে লোকজন ছিল কিন্তু অপরটি খালি।
তিনি জানান, আরেকজন মৎসজীবী একটি খালি ডিঙ্গি ও কাছেই ১৫ জনকে নিশ্চল অবস্থায় ভাসতে দেখে উদ্ধারকারীদের খবর দেন, হয় তারা অজ্ঞান হয়ে ছিলেন অথবা মারা গিয়েছিলেন।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেগাল্ড দাগমানা জানান, বাতাস বের হয়ে ডিঙ্গিটি চুপসে গিয়েছিল।
স্থানীয় মেরিটাইম প্রিফেকচারের এক কর্মকর্তা জানান, বুধবারের দুর্ঘটনার আগে এই চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ব্রিটেন যাওয়ার চেষ্টাকালে আরও ১৪ জন ডুবে মারা গিয়েছিলেন। এর আগে ২০২০ এ সাত জন মারা যান ও দুই জন নিখোঁজ হন এবং ২০১৯ সালে চার জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ফরাসি প্রধানমন্ত্রী জ্যঁ ক্যাসটেক্স এ ঘটনাকে ‘মর্মান্তিক’ আখ্যা দিয়েছেন। মারা যাওয়া শরণার্থীরা মানব পাচারকারীদের শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।