অনলাইন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, তারা আওয়ামী লীগ সরকারকে উত্খাত করতে চায়, কিন্তু আমাদের অপরাধটা কী? কোথায় ব্যর্থ হয়েছি? এ দেশের মাটি ও মানুষের দল আওয়ামী লীগ প্রতিবার ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে, কখনো পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে বলেই দেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, উন্নয়ন হচ্ছে— দেশের এই উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখতে হবে। সারা দেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলে দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ও আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াত জোটের অতীতের সব অপকর্ম দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দেন তিনি।
শনিবার (৭ মে) গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সভাপতির সূচনা বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির নেতৃত্ব কোথায় এমন প্রশ্নে রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির নেতৃত্ব কোথায়? দলটির প্রধান দুজনই তো (খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) সাজাপ্রাপ্ত। এদের সঙ্গে কিছু ডান ও অতি বাম এসে যুক্ত হয়েছে। জিয়া-এরশাদ-খালেদা, এদের ক্ষমতা ছিল ক্যান্টনমেন্টে। এরা পাকিস্তানি স্টাইলে মিলিটারি ডিক্টেটরশিপ চালু করেছিল। একাত্তরের পরাজিতদের অনুসরণ করেছিল। কিন্তু আমরা পরাজিতদের অনুসরণ করব না। নিজস্বভাবে দেশের উন্নয়ন করব, মাথা উঁচু করে চলব।’
দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর পর শনিবার সাড়ে ৫টায় দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের পূর্ণাঙ্গ বৈঠক শুরু হয়। সভার শুরুতে সূচনা বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিরোধিতার নামে দেশের বদনাম করে দেশের বিরোধিতাকারীদের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘অনেকেই আছেন, যারা অতিজ্ঞানী হলেও কম বোঝেন। তারা তাকিয়ে থাকেন কখন তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে। বসে থাকেন কখন বিদেশ থেকে সিগন্যাল আসবে। বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে বদনাম করলেই বিদেশ থেকে যেন এসে তাদের ক্ষমতায় বসাবে! কিন্তু তাদের মনে রাখা উচিত, এখনকার বাংলাদেশ সেটা নয়। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’
এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তির হওয়ার জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ এবার ঈদে নির্বিঘ্নে বাড়ি গেছে ও ফিরছে। তিনি আরো বলেন, ‘গ্রামের যাতায়াতব্যবস্থা এখন অনেক উন্নত হয়েছে। কারণ আমরা তৃণমূল থেকে উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি। গ্রামের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করছি।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময় এগিয়ে এসেছে জানিয়ে এখন থেকেই নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করতে দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই কিছু কাজ করতে হবে। দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। সংগঠনকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের অতীত ও বর্তমানের কুকর্মগুলো মানুষকে মনে করিয়ে দিতে হবে।’
আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা নিয়মিত দলের সম্মেলন করি। জাতীয় সম্মেলনের সময় ঘনিয়ে এসেছে। সম্মেলনের আগে আমরা কিছু কাজ করি। দলের ঘোষণাপত্রের অনেক কিছু আমরা বাস্তবায়ন করেছি। আমরা চাই দেশের গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত থাকুক, উন্নয়নের ধারাটাও অব্যাহত থাকুক।’ বারবার ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে দেশসেবার সুযোগ প্রদানের জন্য দেশের মানুষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী।