সংবাদদাতা:
নওগাঁয় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে শহিদুল ইসলাম নামে এক সংবাদকর্মী হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি অনলাইন পোর্টাল বার্তা২৪ ডটকম এর নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি। শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিতের পর তাকে ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে অভিযুক্তরা। সংবাদ পেয়ে সংবাদ পেয়ে নওগাঁ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ থানা পুলিশের সহযোগিতায় সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম কে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
বর্তমানে তিনি নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার কীর্ত্তিপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দপুর গ্রামের নব-মুসলিম অমিত হাসান। তার পরিবারকে বেশকিছু দিন ধরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী অবরুদ্ধ করে রেখেছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম ও সাংবাদিক একেএম জাহিদুল হক মিন্টু ওই এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের বক্তব্য ক্যামেরায় ধারণ করছিল।
এসময় স্থানীয় ইউপি মেম্বার রেজাউল হকের ছেলে ওয়াহেদুর রহমান রকিসহ অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জন অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। এসময় শহিদুল ইসলামকে এলোপাতারি মারধর করে রকির বাড়ির সামনে নিয়ে গিয়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। তবে অবস্থা খারাপ হবে দেখে সাংবাদিক একেএম জাহিদুল হক মিন্টু ঘটনাস্থল থেকে আগেই চলে আসে।
সংবাদ পেয়ে নওগাঁ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ থানা পুলিশের সহযোগিতায় সাংবাদিক শহিদুল ইসলামকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। তার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসার জন্য নওগাঁ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযোগ আছে হিন্দু ধর্ম থেকে নব-মুসলিম হওয়া এক পরিবারকে ওয়াহেদুর রহমান রকি, আরিফ, মুন্না দেওয়ান, শামীম হোসেন, আল আমিন, রাকিব, রাজনসহ আরো অনেকে মিলে অবরুদ্ধ রেখে তাদের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। এমনকি ওই পরিবারের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করা হয়। পরে ভুক্তভোগীর পরিবার হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও ভয়ে থানা পুলিশের কাছে যেতে পারেনি।
আহত সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রাখার সংবাদ পেয়ে সত্যতা জানতে সহকর্মী একেএম জাহিদুল হক মিন্টু ঘটনাস্থলে যায়। ভুক্তভোগী পরিবারের সাথে কথা বলার সময় ওয়াহেদুর রহমান রকি নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন এসে ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে।
এসময় মারধোর করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর মুন্না নামের একজন মোবাইল ফোনে নব মুসলিমের বিরুদ্ধে সংবাদ করার জন্য মোটা অংকের টাকা দিতে চায়। সেটি আমি প্রত্যাখান করলে তারা আবারো মারধর করে রকির বাড়ির সামনে আমাকে নিয়ে এসে আবার মারধোর করে আটক করে রাখে। পরে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ জানার পর থানা পুলিশের সহযোগিতায় আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। মাথা ও ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হচ্ছে।
ভুক্তভোগী নব মুসলিম মোছা. নূরে জান্নাত বলেন, আমি আল্লাহর ভয়ে হিন্দু ধর্ম থেকে মুসলিম হয়েছি। মুসলিম হওয়ার পর থেকে স্থানীয় ইউপি মেম্বার রেজাউল করিমের ছেলে ওয়াহেদুর রহমান রকি আমাদের কাছে থেকে ৪লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। টাকা না দিলে বাড়ি থেকে বের হতে দিবে না।
টাকা না দিতে চাওয়ায় গত প্রায় ১৫ দিন আগে রকিসহ বেশ কয়েকজন আমার বাড়িতে এলোপাতাড়ি মারধোর করে। পরে সাংবাদিককে জানালে দুপুরের দিকে শহিদুল ইসলাম ও তার সহকর্মী মিন্টু এসে আমাদের বক্তব্য নিচ্ছিল। এসময় রকি ও তার লোকজন এসে সাংবাদিকদের গালাগালি করে ও ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। পরে শহিদুলকে মারপিট করে আটকে রাখে।
নওগাঁ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মো: মেজবাহ বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই বিষয়ে থানায় এখনো লিখিত কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।