অনলাইন ডেস্ক:
টানা তৃতীয় বারের মতো ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে বসছেন নরেন্দ্র মোদি। আজ রবিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তিনি। এর মাধ্যমে কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহেরুর পর ভারতে টানা তৃতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হবেন বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি। একই দিন শপথ নেবেন তার মন্ত্রিসভার সদস্যরাও।
এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কার্যত সাজ সাজ রব দিল্লি জুড়ে। রাজধানীতে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা। নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাত দেশের রাষ্ট্র নেতারা। অন্যরা হলেন—শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংঘে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু, সিসিলিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ আফিফ, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ কুমার জুগনাথ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচন্ড এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সেরিং তোবগে। এছাড়াও এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ৮ হাজারের বেশি বিশিষ্টজনকে।
টানা দুই মেয়াদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই ক্ষমতায় ছিল মোদির দল বিজেপি। তবে এবারের নির্বাচনে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে। যদিও সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। তাই জোট শরিকদের ওপর ভর করেই তৃতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মোদি। গত শুক্রবার এনডিএ জোটের নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন দেন। এরপরই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু কেন্দ্রে নতুন সরকার গঠনের জন্য মোদিকে আমন্ত্রণ জানান।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, স্থানীয় সময় আজ রবিবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মোদি। এই শপথ অনুষ্ঠান ঘিরে হাই অ্যালার্টে দিল্লি। আধাসামরিক কর্মীদের পাঁচটি কোম্পানি, এনএসজি কমান্ডো, ড্রোন এবং স্নাইপার থাকছে নিরাপত্তায়। একটি পাবলিক অ্যাডভাইজরিতে দিল্লির ওপর নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়েছে, অনুষ্ঠান চলাকালীন অপরাধমূলক বা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে বিভিন্ন এরিয়াল প্ল্যাটফরমের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই বিধিনিষেধটি ৯ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত কার্যকর হবে, লঙ্ঘনকারীদের ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৮ ধারার অধীনে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের হোটেল থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে নিয়ে আসার রুটেও থাকবে নিরাপত্তা। লীলা, তাজ, আইটিসি মৌর্য, ক্লারিজেস এবং ওবেরয় থেকে রাষ্ট্রপতি ভবন পর্যন্ত রাস্তায় থাকছে কড়া নিরাপত্তা।
নরেন্দ্র মোদির নতুন মন্ত্রিসভায় ২৭ থেকে ৩০ জন মন্ত্রী থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। যে ফর্মুলায় এই মন্ত্রিসভায় বিজেপি তার শরিকদের মন্ত্রণালয় বণ্টন করতে পারে, তা হলো—প্রতি চার জন এমপির মধ্যে এক জন মন্ত্রী, প্রতি দুই এমপির মধ্যে একজন প্রতিমন্ত্রীর পদ। শরিকদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজেপি নেতা রাজনাথ সিং, অমিত শাহ ও জেপি নড্ডা। সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, চন্দ্রবাবু নাইডুর টিডিপি পাচ্ছে চার মন্ত্রীর পদ আর নীতিশ কুমারের জেডিইউ পাচ্ছে দুই মন্ত্রীর পদ।
সরকারের মন্ত্রীরা শপথ পাঠের পর বসতে চলেছে লোকসভার অধিবেশন। ১৫ জুনের কাছাকাছি সময়ে শুরু হতে পারে ১৮তম লোকসভার প্রথম অধিবেশন। তা চলতে পারে ২২ জুন পর্যন্ত।
বিরোধী দলনেতা হচ্ছেন রাহুল গান্ধী
রাহুল গান্ধীকে লোকসভার বিরোধী দলনেতা করার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। তবে রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন, তিনি ভেবে জানাবেন। গতকাল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি রাহুল গান্ধীকে লোকসভায় বিরোধী দলনেতার ভূমিকা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করে একটি প্রস্তাব পাশ করে। সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে দলের ৯৯টি আসন জয়ের জন্য রাহুল গান্ধীকেই কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা মানিকম ঠাকুর এর আগে বলেছিলেন, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হিসেবে আমরা সকলেই মনে করি রাহুল গান্ধীকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। এই দায়িত্ব গ্রহণ করলে তিনি ভারতের ২৩৪ জন এমপির নেতৃত্ব দেবেন। খবর এনডিটিভি ও হিন্দুস্তান টাইমসের।