অনলাইন ডেস্ক:
ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি ‘রাজপথ থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের ছাউনিতে’ ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক সেনা সদস্যরা। একইসঙ্গে দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীকে ছাত্র-জনতার মুখোমুখি দাঁড় না করানোর আহ্বান জানিয়েছেন সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসাররা।
রোববার (৪ আগস্ট) রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
অবসর নেয়া সেনা কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে লিখিত বিবৃতি পাঠ করেন সাবেক সেনা প্রধান ইকবাল করিম ভূইয়া। এই সময়ে উপস্থিত ৪৮ জন সেনা কর্মকর্তার নামের তালিকা সরবরাহ করা হয়।
মূল বক্তব্যে ইকবাল করিম ভূঁইয়া বলেন, ‘দেশের নীতিনির্ধারকরা যদি বিবেক, বুদ্ধি ও হৃদয়হীন হয়ে না পড়তেন, তাহলে গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড়, করুণ, মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো ঘটত না। এসব হামলা, আক্রমণ ও পাল্টা প্রতিরোধে অঙ্গহানি ঘটেছে অগণিত মানুষের। অন্ধ হয়েছেন বহুসংখ্যক কিশোর ও তরুণ। অসহায় নাগরিকরা প্রয়োজনীয় এবং জরুরি চিকিৎসাও পাচ্ছেন না। তার ওপরে চলছে ব্লক রেইড করে, সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে বাড়িঘর, মেস চিনিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার মতো ভয়ংকর ঘটনা। মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন অথবা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন হাজার হাজার নিরপরাধ কিশোর–কিশোরী, তরুণ-তরুণী, যুবক-যুবতী।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহেদুল আনাম খানসহ ছয়জন সাবেক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা বক্তব্য দেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) নুরুদ্দীন খান।
লিখিত বক্তব্যে জেনারেল (অব) ইকবাল বলেন, ‘আমাদের সীমান্ত এই মুহূর্তে অরক্ষিত। ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলন দমনের জন্য সীমান্ত হতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিজিবি সদস্য প্রত্যাহার করা হয়েছে। বর্তমান সময়ে সশস্ত্র বাহিনীকে অবিলম্বে সেনা ছাউনিতে ফিরিয়ে নিয়ে যে কোনো আপতকালীন সংকট মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন।’
‘অনুরোধ করে বলছি, এই সংকট আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করুন। দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীকে ছাত্র জনতার মুখোমুখি দাঁড় করাবেন না।’
তিনি বলেন, ‘সংঘঠিত সকল হত্যাকাণ্ড, জখম, গুলি, হামলা, ভাংচুর, সন্ত্রাসের ঘটনার স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত হতে হবে জাতিসংঘের নেতৃত্বে এবং তাদের অধীনে। আমরা সকলে বাংলাদেশের মানুষকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করি এবং ভালোবাসি। সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত সকল সদস্য সার্বভৌমত্ব রক্ষার শপথ ও সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নিয়েই এই পেশায় নিয়োজিত আছেন। আজ দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে আমাদের সকল সহকর্মীকে বিনীতভাবে অনুরোধ করবো, সৈনিকের পেশার সর্বোচ্চ মর্যাদা, মানবিকতা ও নৈতিক মানদণ্ড বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করবেন।’