themesdealer
domain was triggered too early. This is usually an indicator for some code in the plugin or theme running too early. Translations should be loaded at the init
action or later. Please see Debugging in WordPress for more information. (This message was added in version 6.7.0.) in /home/projonmeralo/public_html/wp-includes/functions.php on line 6114অনলাইন ডেস্ক:
সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নিয়ে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে ভারত কোনোভাবেই কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে পারবে না। তবে ১৫০ গজের বাইরে হলে আপত্তি থাকবে না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সীমান্তে আমাদের জায়গা কাউকে আমরা দেব না, সীমান্তে আমাদের ব্যাপক শক্তি আছে। আর জনগণই হচ্ছে আমাদের বড় শক্তি। কাজেই সীমান্তে নীতিবহির্ভূত যে উন্নয়ন কাজ তারা করছে, সেটা আমরা করতে দেব না।
রোববার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে এ পর্যন্ত মোট চারটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এসবের মধ্যে একটি ছিল ১৯৭৫ সালের নীতিমালা অনুসারে সীমান্ত লাইন নির্ধারিত হওয়ার পর ১৫০ গজের মধ্যে কোনো প্রতিরক্ষা কাঠামো আছে, এমন জিনিস কেউ রাখতে পারবে না। এছাড়া শূন্যরেখা থেকে ১৫০ গজের মধ্যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে গেলে একে অপরের থেকে সম্মতি নিতে হবে। কোনো সম্মতি ছাড়া তারা এ কাজটি করতে পারবেন না।’
‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান চার হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে তিন হাজার ২৭১ কিলোমিটারে এরইমধ্যে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। বাকি আছে ৮৮৫ কিলোমিটার। বিগত সরকারের আমলের ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে কতগুলো অসম কাজ—যেগুলো ভারতের করা ঠিক হয়নি—কিন্তু সেগুলো করতে তখনকার বাংলাদেশ সরকার তাদের সুযোগ দিয়েছিল।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এসব সুযোগের মধ্যে ১৬০টি স্থানে তারা একই গিয়ারওয়ালা কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছে, তারপরে ৭৮টি স্থানে আরও ঝামেলা রয়েছে। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্তে একটা, আরেকটা তিনবিঘা করিডরের ওখানে, আরেকটা নওগাঁর পত্নিতলার ওখানে, আরেকটা লালমনিরহাট সীমান্ত। সম্প্রতি এসব স্থানে সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
‘এরইমধ্যে বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বিজিবি শক্ত অবস্থান নেওয়ায় তারা এই জায়গাগুলোতে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে—কিছু কিছু জায়গায় আগের সরকার লিখিত দিয়ে গেছে যে এটা তারা (ভারত) করতে পারবেন—যেগুলো তাদের দেওয়া উচিত হয়নি। এরমধ্যে বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে, তিনবিঘা করিডরের ওখানে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘১৯৭৪ সালে যে বেরুবাড়ী চুক্তি হয়েছিল, তখন ওটা দিয়ে দিয়েছি, আমাদের পার্লামেন্টেও সেটা প্রস্তুত ছিল। আর ভারত আমাদের এই প্যাসেজটা (সরু পথ) দেওয়ার কথা ছিল, ওখানে যাওয়ার করিডরটা। ওটা সারাজীবনের জন্য আমাদেরই থাকবে। আমরা দিয়ে দিলেও তারা জায়গাটা আমাদের দেয়নি। আগে তারা এক ঘণ্টা খুলতো, একটা ঘণ্টা বন্ধ করতো, তারপরে ছয়ঘণ্টা খুলতো, ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকতো, রাতে পুরোটাই বন্ধ থাকত।’
‘২০১০ সালের চুক্তি করা হয়েছিল, তখন বলা হয়েছিল, এটা পুরোটা সময় খোলা থাকবে, আমরা ব্যবহার করতে পারবো। কিন্তু এটির বদলে একটি বিরাট ঝামেলা করা হয়েছে। সেটা হচ্ছে, দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা শূন্যরেখা থেকে যে ১৫০ গজ দূরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কথা, সেটা তারা করতে পারবে। এজন্য এখানে বড় ধরনের একটা সমস্যা হয়েছে,’ যোগ করেন উপদেষ্টা।
‘আর বিজিবির সাথে আমাদের জনগণ শক্ত অবস্থান নেওয়ায় অন্যান্য জায়গা থেকে তারা কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এ জন্য আমি বিজিবি ও বাংলাদেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও ধন্যবাদ জানাই, তারা কাজটি ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।’
বর্তমানে সীমান্তে ভারতীয়দের কাজ বন্ধ রয়েছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘তিন বিঘা করিডর, নওগাঁর পত্নিতলা, লালমনিরহাট সীমান্ত—যে কয়েকটি জায়গায় তারা কাজ শুরু করেছিল, সবগুলোই বন্ধ রয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গেল পাঁচ আগস্টের পর তারা ওখানে কিছু করেনি, যে কারণে আমরা ভেবেছিলাম তারা আর কিছু করবে না। ভেবেছি, তারা এতদিন যে অবৈধ সুবিধা নিয়েছে, সেটা আর নেবে না।’
‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে বিজিবি-বিএসএফ ডিজি পর্যায়ের একটা বৈঠক আছে, সেখানে আলোচনা হবে, ফেব্রুয়ারিতে যাতে এটা বন্ধ করা যায়।’
তাদের এই কাজগুলো করতে দেবেন কিনা- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের এই কাজগুলো আমরা করতে দেব না। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে তিনবিঘা করিডরের ভেতরে যে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা, তা ওদের পুরো পেটের মধ্যে। চারদিকে ওরা, মাঝখানে আমরা। কেবল আমাদের সরু একটা পথ আছে। কৌশলে এ বিষয়গুলো দেখতে হবে।’
অসম চুক্তিগুলে বাদ দেওয়া হবে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ জন্যই ফেব্রুয়ারিতে আলোচনা হবে। আর আমরা একটি চিঠি দেব, যাতে অসম চুক্তিগুলো বাদ দেওয়া যায়।’
এতে সমস্যার সমাধান হবে কিনা, তিনি বলেন, ‘অবশ্যই সমস্যার সমাধান হবে। সমস্যা একটি শব্দ, সমাধানও একটি শব্দ।’
সাতক্ষীরার কাকডাঙ্গা গ্রামের মাঝে সোনাই নদীতে ভারতীয়রা নাইটভিশন ক্যামেরা বসিয়েছে। সুরক্ষা বেড়া দিয়েছে। এ বিষয়ে আপনাদের জানানো হয়েছে কিনা, প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরার ক্ষেত্রে নদীর মাঝপথে সীমান্ত, ওদের পাড়ে একটা ঝামেলা করেছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে অনেক দূরে কাঁটাতারের স্থাপনের সুযোগ থাকলেও তারা করেনি। আবার কোথাও উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নাইটভিশন ক্যামেরা বসিয়েছে। যদিও তাদের এলাকায় বসিয়েছে, কিন্তু সেটা উচিত হয়নি। কিন্তু এখন তো বলা যায় না, সব দেশেরই কিছু কিছু জায়গায় তারা নজরদারি করে, আমরাও করি।’
সীমান্তে আমাদের ব্যাপক শক্তি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণ হচ্ছে আমাদের বড় শক্তি।’
বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে কঠোর হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের জায়গা আমরা দেব না। আমাদের জায়গা দেব না, এখানে কঠোর থাকব না মানে কী? তারা বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা করার চেষ্টা করবে, কিন্তু আমরা ছলেবলে কৌশলে সেই সমস্যার সমাধান করব।’ সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল