অনলাইন ডেস্ক:
হিন্দু উত্তরাধিকার আইনে লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ। শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের সভাপতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ময়না তালুকদার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা হিন্দু অভিভাবকত্ব আইনের লিঙ্গবৈষম্য দূর করে সন্তানের উপর বাবা এবং মায়ের সমান অভিভাবকত্ব ও অধিকার প্রদানের আহ্বান জানাচ্ছি। হিন্দু আইনে দত্তক নেয়ার বিধান থাকলেও সে অধিকার শুধু পুরুষের। স্বামীর অনুমতি সাপেক্ষে স্ত্রী দত্তক নিতে পারে। অপুত্রক বিধবা মৃত্যুর আগে স্বামীর “পূর্ব নির্দেশ ছিল” প্রমাণ করতে না পারলে দত্তক নিতে পারে না। শুধু তাই নয়, দত্তক নিতে হবে শুধু পুত্র অর্থাৎ পুরুষ শিশুকে। কন্যাশিশু দত্তক নেওয়ার বিধান নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রচলিত প্রথানির্ভর হিন্দু আইনে নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয়লিঙ্গের মানুষ সুদীর্ঘকাল যাবত নানাভাবে বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছেন। আইনগুলো প্রায় শতাব্দিকাল যাবত অসংশোধিত রয়ে যাওয়ায় এবং কোডিফাইড না হওয়ায় আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং সুবিচার প্রতিষ্ঠায় ব্যাঘাত ঘটছে।
এই আইন বৃটিশ আমলে গৃহীত এবং সনাতন হিন্দুধর্মের সঙ্গে অসঙ্গতিপূণ। বৌদ্ধ, জৈন এবং বিভিন্ন আদিবাসী গোত্রের মানুষ আলাদা ধর্মের অনুসারী হলেও তাদের সবাইকে একই হিন্দু আইনের আওতাভুক্ত করা হয়েছে। ধর্মের নামে এই আইন প্রচলিত হলেও বাস্তবিক অর্থে এর সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক নামেমাত্র।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পুলক ঘটক ছাড়াও সংগঠনের নেতা রীনা রায়, রত্না দাশ, সুভাষ সাহা, রাকেশ আচার্য, সমীরণ রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।