অনলাইন ডেস্ক:
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, কারাগারে তাকে ধীরে ধীরে বিষ দিয়ে হত্যা করা হতে পারে। বুধবার (১০ মে) তিনি নিজেই এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। জিও টিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) মঙ্গলবার (৯ মে) ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরান খানকে গ্রেফতার করে। আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বুধবার ইমরান খান আদালতকে জানান, কর্তৃপক্ষ এমন একটি ইনজেকশন দেয় যা ধীরে ধীরে একজন ব্যক্তিকে হত্যা করে। তিনি আশঙ্কা করছেন যে তার সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটতে পারে।
আদালতে ইমরান খানের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ফয়সাল সুলতানের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার দাবি করেন তিনি। সে সময় তিনি বলেন, ‘মাকসুদ চাপরাশিকে যে ধরনের শাস্তিমূলক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল আমার সঙ্গেও এমন কিছু হোক তা আমি চাই না।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলায় মালিক মাকসুদ আহমেদ ওরফে মাকসুদ চাপরাশী ছিলেন প্রধান ব্যক্তি। ২০২২ সালের জুনে সংযুক্ত আরব আমিরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
চাপরাশীর মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে পিটিআই প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার জন্য একটি স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এছাড়া গত বছরের নভেম্বরে তার ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন ইমরান। ২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন তিনি।
তার ওপর হামলা ও তাকে হত্যার চেষ্টার পেছনে সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন ইমরান খান। তবে এর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি।
ইসলামাবাদের পুলিশ লাইন্সের একটি অস্থায়ী আদালতে শুনানির সময় ইমরান খান অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের আধাসামরিক রেঞ্জার্সের সদস্যরা তাকে আটক করে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখানো হয়।
মঙ্গলবার ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরানকে আটক করার পর রেঞ্জার্স কর্মকর্তারা কালো রঙের টয়োটা হিলাক্স ভিগোতে করে ইমরানকে রাওয়ালপিন্ডির এনএবি কার্যালয়ে নিয়ে যান। এদিকে, তাকেকে গ্রেফতারের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ইমরান খানের সমর্থকদের ‘রাষ্ট্রীয় শত্রু’ আখ্যায়িত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পিটিআইয়ের সমালোচনা করে শাহবাজ শরিফ জানান, দলের কর্মীরা যে অপরাধ করেছে তা ক্ষমার অযোগ্য।