মাসুদ রানা:
৩০ মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে নওগাঁয় আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আম চাষিরা বলছেন, ঝড়ে আম বাগানের প্রায় ১০-১৫ শতাংশ আম ঝরে পড়ে গেছে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, তারা এখনো ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে পারেনি।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জেলার পোরশা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাগানে-বাগানে মাটিতে পড়ে আছে ঝরে পড়া আম। ফেটে নষ্ট হয়েছে অনেক আম। কোনো কোনো বাগানে আম গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে।
নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া কার্যালয় সূত্র জানায়, গতকাল শুক্রবার রাত ৯টা ৩০ থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নওগাঁর বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে দমকা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যায়। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৭০-৮০ কিলোমিটার।
নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এ বছর ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। ৫হাজার ২০০ আম চাষির প্রায় সাড়ে ৮ হাজার বাগান রয়েছে। এ বছর প্রতি হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৫ মেট্রিক টন। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন।
জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ আম উৎপাদন হয় পোরশা, সাপাহার ও পত্নীতলা উপজেলায়। পোরশা উপজেলার সারাইগাছী গ্রামের আমচাষি সাইফুর রহমান বলেন, ৩০ বিঘা জমির ওপর তার দুটি বাগান রয়েছে। ঝড়ে বাগানের দুই হাজার গাছের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ আম পড়ে গেছে। বেশ কিছু গাছের ডাল ভেঙে পড়েছে। আম এখনও পরিপক্ক না হওয়ায় ঝরে পড়া আম ৩-৪ টাকা কেজির বেশি বিক্রি হবে না। আর যেসব আম ফেটে গেছে, সেসব কেউ কিনবে না।
পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, পোরশায় এবার ১০ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এবার বাগানে আম ভালো ধরেছিল। তবে গত রাতে ও চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ের ঝড়-বৃষ্টিতে আমের বেশ ক্ষতি হয়ে গেল। গত রাতের ঝড়ে আমের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরূপণ করা যায়নি, তবে কিছু বাগান পরিদর্শন করে ধারণা হচ্ছে, বড় আম গাছের প্রায় ৬ থেকে ৭ শতাংশ আম পড়ে গেছে। আর ছোট গাছের প্রায় ২ থেকে ৩ শতাংশ আম ঝরে পড়েছে।
এ দিকে ঝড়ে আম ছাড়াও বোরো ধানের খেতের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে ধানগাছ হেলে পড়ায় এবং জমিতে পানি জমে যাওয়ায় ধান চিটা হয়ে যাওয়া এবং পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। এতে ধানের উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।