আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তন্ময়ঃ
নওগাঁ বদলগাছীর ঐতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব নির্দশন পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে এবার ইদে গতবারের চেয়ে দর্শনার্থী বেড়েছে। ঈদের দিন শনিবার ও রোববার দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। ইদের আনন্দ উপভোগ করতে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে ছুটে এসেছিলেন। নিরাপত্তাব্যবস্থা ভালো থাকায় দর্শনার্থীরা ঘুরতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন।
নওগাঁ জেলার মধ্যে পাহাড়পুরের অবস্থান হলেও জয়পুরহাট জেলা শহর থেকে দুরত্ব অনেক কম। জয়পুরহাটে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা রয়েছে। একারণে বিভিন্ন স্থানের লোকজন রেলপথেও জয়পুরহাট এসে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে যাচ্ছেন। পাহাড়পুর যোগাযোগের সকল সড়ক পথ ভালো থাকায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীরা ঘুরতে এসেছেন। এবার পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশ থাকায় যানজটও নেই।
এতে দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ বোধ করছেন। ঈদের ছুটিতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার রের্কড পরিমাণ দর্শনার্থী আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার জাদুঘর কর্তৃপক্ষ। দর্শনার্থীদের ভিড় জমে যায় ঐতিহাসিক হলুদ বিহারসহ বদলগাছী সদরে পাশে ছোট যমুনা নদীর বালুচরে ও রিভার সিটি পার্কের নিচে।
রোববার দুপুরে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে গিয়ে দেখা গেছে, দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। অনেকেই পরিবার পরিজন, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে পাহাড়পুর ঘুরতে এসেছেন। এদের কেউ গ্রুপ ছবি কেউবা সেলফি তুলছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ছিল চোখে পড়ার মতো। দর্শনার্থীরা পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে চতুরদিক ঘুরে ঈদের আনন্দ উপভোগ করছিলেন।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে এনেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসে এসেছিলাম। ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে এবং খানিকটা স্বস্তি পেতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার এসেছি। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের পরিবেশ আমাদের খুব ভালো লেগেছে।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ি উপজেলার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা ছয় জন বন্ধু ট্রেনযোগে জয়পুরহাট রেলস্টেশনে এসে নেমেছি। সেখান থেকে ইজিবাইকে চড়ে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে এসেছি। জয়পুরহাট থেকে পাহাড়পুরের দূরত্ব খুবই কম। আবার যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে এসে আমরা সবাই খুবই আনন্দ পেয়েছি।
পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার কাস্টেডিয়ানের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ঈদুল ফিতরের দিনে প্রায় ১৫ হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটেছিল। এবারের ইদুল ফিতরের দিন ২১ হাজারের বেশি দর্শনার্থী হয়েছিল। ঈদের দ্বিতীয় দিন রোববারে আগের দিনের চেয়ে দর্শনার্থী বেশি হয়েছে। ইদে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে যানবাহনের চাপ থাকত। একারণে আগে থেকে পাহাড়পুর এলাকা যানজটমুক্ত রাখার কথা নওগাঁ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার জানানো হয়েছিল । তাঁরা ইদে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ঈদের থেকেই পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারে ট্রাফিক পুলিশ দেওয়া হয়। এতে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার এলাকায় আগের ঈদের মতো আর যানজট নেই। দর্শনার্থীরা স্বাচ্ছন্দে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার দর্শন করছেন।
পাহাড়পুর জাদুঘরের কাস্টেডিয়ান ফজলুল করিম বলেন, গত বারের তুলুনায় এবার ইদে দর্শনার্থী বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা এসেছেন। ট্রাফিক ব্যবস্থা থাকায় এবার যানজট নেই। ইদের ছুটিতে রের্কড পরিমাণ দর্শনার্থী আসবে বলে আশা করছি।