• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৯ পূর্বাহ্ন
  • Bengali Bengali English English
সংবাদ শিরোনাম
সারাদেশে হিট অ্যালার্ট জারি ইসরায়েলের সঙ্গে গুগলের চুক্তি, প্রতিবাদ করায় চাকরি গেলো ২৮ কর্মীর তৃতীয় ধাপে যেসব উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে ৯৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ: আবেদন যেভাবে নওগাঁয় দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে স্বামী-স্ত্রী নিহত ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ একীভূত হচ্ছে ৩০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়টার্সের প্রতিবেদন ; ৫ মিলিয়ন ডলারে মুক্তি পেয়েছে এমভি আব্দুল্লাহ ইসরায়েলে হামলা করেছে ইরান ইসরায়েলে আঘাত হানতে সক্ষম ইরানের শক্তিশালী ৯ ক্ষেপণাস্ত্র নওগাঁয় ৪২ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজাসহ গ্রেফতার ২ মান্দায় মদপানে তিন কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা নওগাঁর মান্দায় বিষাক্ত মদপানে তিন বন্ধুর মৃত্যু সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করুন: প্রধানমন্ত্রী ঈদের ৫ দিনের সরকারি ছুটি শুরু

পাহাড়পুরের ফলকচিত্র : আবহমান বাংলার প্রতিচ্ছবি

প্রজন্মের আলো / ২৩১ শেয়ার
Update রবিবার, ৮ মে, ২০২২

——————————-
মো. সফিকুল ইসলাম
——————————-
বাংলায় পাল সাম্রাজ্যের মহান স্থপতি গোপালের পুত্র দ্বিতীয় পালরাজা শ্রী ধর্মপাল দেব অষ্টম শতকের শেষ দিকে বর্তমান নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলায় প্রতিষ্ঠা করেন পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার বা সোমপুর মহাবিহার। এটি মূলত ওই সময়ের একটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়। দশম শতকে শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ছিলেন। তিনশত বছরের বেশি সময় এই বিহার টিকে ছিল।
উপমহাদেশের প্রত্নতত্ত্বের পথিকৃৎ ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের মহাপরিচালক স্যার আলেকজান্ডার কানিংহাম ১৮৭৯ সালে ধ্বংসপ্রাপ্ত এই মহাবিহারটি আবিস্কার করেন। পরবর্তীতে, নাটোর দিঘাপতিয়ার বিখ্যাত রাজপরিবারের সন্তান ও দয়ারামপুরের জমিদার বরেন্দ্রভূমির কৃতিসন্তান কুমার শরৎকুমার রায়ের একক অর্থায়নে পাহাড়পুর মহাবিহার প্রথম খনন শুরু হয় ১৯২৩ সালের ১ মার্চ, চলে একটানা ৫ বছর। তাই, বলা হয়ে থাকে ‘পাহাড়পুর আবিস্কারের জনক কানিংহাম’, আর ‘পাহাড়পুর খননের জনক শরৎকুমার’। বরেন্দ্র-অনুসন্ধান-সমিতি, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এই খনন হয়। জাতিসংঘের ইউনেস্কো পাহাড়পুরকে `বিশ্ব-সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য` হিসেবে ১৯৮৫ সালে স্বীকৃতি প্রদান করে, ইউনেস্কোর নবম অধিবেশনে। ইউনেস্কোর ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্য স্থানের মধ্যে পাহাড়পুর ৩২২তম।
সোমপুর মহাবিহারে খননে প্রাপ্ত প্রত্নসম্পদের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো পোড়ামাটির ফলকচিত্র (Taracotta)। ফলকচিত্রগুলো বাংলাদেশের লোকায়ত সংস্কৃতির অনবদ্য জীবন্ত স্মারক। পাহাড়পুরের ফলকচিত্রে আবহমান বাংলার প্রতিচ্ছবি প্রতিফলিত হয়। অনুপম মনোমুগ্ধকর শিল্পকর্মগুলো বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে।
কুশলী কারিগর ও শিল্পীরা পাহাড়পুরের ফলক চিত্রে লোকায়ত বাংলার জীবনকে তুলে ধরেছেন। শিল্পীরা কোনো রকমের কল্পনার আশ্রয় নেননি। সমাজজীবন থেকে বিষয়বস্তু বেছে নিয়েছেন। সাধারণ মানুষের আটপৌরে জীবন, নৈসর্গিক প্রকৃতি, দেব-দেবী, ইতিহাস কাহিনী ইত্যাদি অত্যন্ত সার্থকভাবে অঙ্কিত হয়েছে ফলকচিত্রে।
পাহাড়পুর মহাবিহারে আবিস্কৃত ফলকচিত্রের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। প্রধান মন্দিরের বর্হিদেয়ালে এখনও দুই হাজারের বেশি ফলকচিত্র লাগানো রয়েছে। প্রায় আটশতের অধিক ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত অবস্থায় সংগৃহিত হয়েছে। অনেক ফলকচিত্র আবিস্কারের পরও চুরি হয়েছে বা খোয়া গেছে। প্রাচীন ফলকের অনুরূপ ফলক নির্মাণ করে মন্দিরের বর্হিদেয়ালে সারিবদ্ধভাবে আধুনিককালে স্থাপন করে আকর্ষণ সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিষয়বস্তু ও শিল্পকৌশলের দিক বিবেচনা করে ইতিহাসবিদ ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার (আর. সি. মজুমদার) তাঁর বাংলাদেশের ইতিহাস, প্রাচীনযুগ গ্রন্থে পাহাড়পুরের আলোচিত এই প্রত্নসম্পদকে (টেরাকোটা ভাষ্কর্য) তিন শ্রেণিতে বিভাজন করেছেন। প্রথমটি- লোক শিল্প, দ্বিতীয়টি- অভিজাত শিল্প এবং তৃতীয়টি- এই দুইয়ের মাঝামাঝি।
ড. রমেশচন্দ্র মজুমদার বলেন যে, ‘পাহাড়পুরের মন্দিরগাত্রে খোদিত যে প্রস্তর ও পোড়ামাটির ফলক আছে, তাহা হইতে সর্বপ্রথমে বাংলার নিজস্ব ভাষ্কর্য শিল্পের বৈশিষ্ট্যের পূর্ণ পাওয়া যায়।’
ড. মুজমদারের মতে, প্রস্তরের কয়েকটি ও পোড়ামাটির সমস্ত ফলকগুলো প্রথম শ্রেণির অথবা লোকশিল্পের অন্তর্ভূক্ত। পুরাণ, রামায়ণ, মহাভারত ও ঈশপের গল্পে বর্ণিত দৃশ্যাবলী ও অনেক কাহিনী এতে খোদিত হয়েছে। কৃষ্ণের জন্মকথা এবং যে সকল লীলা বাঙালির চিরপ্রিয় এবং বাংলার প্রতি ঘরে পরিচিত, তার বহু দৃশ্য এতে আছে। সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ ও জীবনযাত্রার দৈনন্দিন কাহিনী এতে বিশেষভাবে ফুটে ওঠেছে।
পাহাড়পুরের ফলকচিত্রে আছে, মেয়েরা নানা ভঙ্গিতে নৃত্য করছে, শিশুকে কোলে নিয়ে মা কূপ হতে জল তুলছে অথবা জলের কলসীসহ গৃহে ফিরছে, কৃষক লাঙ্গল কাঁধে করে মাঠে যাচ্ছে, বাজিকর কঠিন কঠিন বাজি দেখাচ্ছে, শীর্ণকায় সাধু-সন্ন্যাসী কাঁধের উপর কাষ্ঠখণ্ডের সাহায্যে তৈজসপত্র বহন করে লম্বা দাড়ি ঝুলিয়ে ন্যুজ্ব দেহে চলছে, পরচুল পরা দারোয়ান লাঠি ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঝিমাচ্ছে।
প্রেমালাপে মত্ত যুবক-যুবতী, পুরুষ ও স্ত্রী, বাদ্যকরগণ এবং তাদের বাদ্যযন্ত্র, পূজানিরত ব্রাহ্মণ, অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত পুরুষ ও নারী ব্যায়ামবিদের হাতের উপর দেহের ভারসাম্য রক্ষাসহ বিভিন্ন শারীরিক কসরৎ, ধনুর্বাণহস্তে রথারোহী যোদ্ধা, পর্ণমাত্র পরিহিত শবর স্ত্রী-পুরুষের প্রেমালাপ, ধনুহস্তে শবর, মৃত জন্তু হস্তে নিয়ে বীরদর্পে পদক্ষেপকারিণী শবর রমণী-এরূপ অসংখ্য দৃশ্য শিল্পীরা খোদাই করেছেন।
পোড়ামাটি এই শিল্পে কৃষ্ণলীলার দৃষ্টান্ত প্রচুর এবং এখানে সাধারণ মানুষরূপেই কৃষ্ণ চিহ্নিত হয়েছেন। ‘পঞ্চতনন্ত্র` ও `বৃহৎকথা’ ইত্যাদি লোক সাহিত্যের আখ্যান বস্তু এই লোক শিল্পে অত্যন্ত সজীব হয়ে উঠেছে। এছাড়া রয়েছে সমস্ত জন্তু-জগৎ, গাছ, লতা-পাতা ও ফুল ইত্যাদি। সিংহ, ব্যাঘ্র, দানব, নাগ, মহিষ, হরিণ, শৃগাল, হস্তী, শুকুর, বানর, বেজী, দৈত্য, খরগোস, সর্প, টিকটিকি, সাপ-বেজীর লড়াই, বাঘ-সিংহের যুদ্ধ ইত্যাদি সরিসৃপও নিজস্ব ভঙ্গীমায় অত্যন্ত স্বাভাবিকতার সঙ্গে ফলকচিত্রে শিল্পায়িত হয়েছে। অনুরূপভাবে রাজহংস, পাতিহাঁস, কচ্ছপ, শৈব-লোকলিস দর্শনের যুগল সাপ, যুগল মাছ ও একটি উট (বিরূপাক্ষের বাহন) বিশেষ কৌতুহল সৃষ্টি করেছে।
ধর্মীয় তাৎপর্যপূর্ণ ফলকসংখ্যা কম। যা আছে তাতে বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্য দেব-দেবীকে সমানভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বোধিসত্ত¡, তারা, পদ্মপানি, মঞ্জুশ্রী, ইত্যাদির সাথে শিব, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, গণেশ, সূর্য ইত্যাদি মূর্তি প্রদর্শিত হয়েছে। এছাড়া আছে কিছু স্মারক চিহ্ন। এগুলোর মধ্যে ত্রিশূল, কীর্তিমুখ, শঙ্খ, কলাগাছ, সূর্য ও চন্দ্রের সংখ্যাই বেশি। মূল্যবান দ্রব্যের মধ্যে মুকুট ও মুক্তার মালা প্রধান। উপ-দেবদেবীর মধ্যে বিদ্যাধর, গন্ধর্ব, কিন্নরী ও হনুমানের প্রাচুর্য রয়েছে।
পাহাড়পুরের ফলকগুলো খ্রিস্টিয় অষ্টম শতকে অর্থাৎ মন্দির নির্মাণকালের সমসাময়িক। কোনোরকম পারস্পর্য রক্ষা না করেই ফলকগুলোকে মন্দিরে লাগানো হয়েছে। এতে অনুমিত হয় যে, নির্মাণ চুল্লি থেকে বের করে এনেই ফলকগুলো আপন আপন ইচ্ছেনুযায়ী লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। ছাঁচে তৈরি এসব ফলকগুলো অর্ধ-উদ্গতভাবে বিভিন্ন দৃশ্য শোভিত হয়েছে। ফলকগুলো বিভিন্ন আকারের। বড়গুলোর মাপ-১৬ ইঞ্চি x ১২ ইঞ্চি x আড়াই ইঞ্চি, আবার কতকগুলো মাত্র ৬ বর্গ ইঞ্চি, ফলকগুলোর সাধারণ মাপ ১৪ থেকে ৮ ইঞ্চি লম্বা ও সাড়ে ৮ ইঞ্চি চওড়া।
পাহাড়পুরের সমুদয় ফলকচিত্রের নিবিড় পর্যক্ষেণ ও নির্মাণ শৈলী থেকে স্পষ্ট ধারণা করা যায় যে, সেখানে বিভিন্ন শ্রেণির ভাষ্কর ছিলেন। যেমনি ছিলেন অতি সাধারণমানের শিল্পী তেমনি ছিলেন অত্যন্ত উঁচুমানের শিল্পীও। উৎকীর্ণ পুরুষ ও নারী মূর্তির গঠন অতি সাধারণ মানের শিল্পীর গড়া। দেহের গঠন সমানুপাতিক নয়, সৌষ্ঠবহীন এবং অনেক সময় অস্বাভাবিক। পরিধেয় বসন-ভূষণ অতিকায় সংক্ষিপ্ত ও সাধারণ, গতি ও ভঙ্গির মধ্যে কোনো লাবণ্য নেই। শিল্প সুষমার অভাব। অর্ন্তনিহিত কোনো ভাব বা চিন্তা মুখশ্রীতে ফুটে উঠেনি। প্রায় ক্ষেত্রেই কেবলমাত্র আঁচড় কেটে হাত-পায়ের আঙ্গুল ও নখের রূপ দেয়া হয়েছে এবং গোলাকার মুখে স্ফীত প্রায় বড় বড় গোল চক্ষু বসিয়ে দেয়া হয়েছে।
অনেক ফলকচিত্র আবার শিল্প সুষমায় ভরা। সংখ্যায় কম হলেও বিশেষ করে দ্বিতীয় শ্রেণির পাথরের ফলকে উৎকীর্ণ মূর্তিগুলো তার প্রমাণ। এই শ্রেণির ফলকগুলো হলো- কৃষ্ণ, বলরাম, শিব, যমুনা, দেব-দেবী, পুরুষ ও নারীর প্রণয় ইত্যাদি। এই শ্রেণির মূর্তির সহিত প্রথম শ্রেণির অন্তর্গত অনুরূপ কয়েকটি প্রণয়ীযুগলের মূর্তির তুলনা করলেই শিল্প হিসেবে দু’য়ের প্রভেদ স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়।
মুখশ্রী, দাঁড়াবার ভঙ্গী, নারীমূর্তির ইষৎ বক্র লীলায়িত দৃষ্টিভঙ্গী ও সলাজ হাস্যস্ফুরিত অধর, হস্তপদাদির গঠন সৌষ্ঠব, পরিধেয় বসনের রচনারীতি সর্বোপরি নর-নারীর প্রেমের মাধুর্য ও মহত্ব মূর্তির মধ্যে ফুটে উঠেছে। শিল্পীর শিক্ষা-দীক্ষা ও সৌন্দর্য্য-অনুভূতি অনেক উচ্চস্তরের। বলরাম ও যমুনার মূর্তির সহিত যম, অগ্নি ইত্যাদি এবং দক্ষিণ প্রাচীরে অবস্থিত শিব মূর্তির সহিত অন্য শিবমূর্তির তুলনা করলেও স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, পাহাড়পুরের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ভাষ্কর্যের মধ্যে ব্যবধান অনেক ও প্রকৃতিগত।
কৃষ্ণ ও ইন্দ্রের মূর্তির মধ্যে যথেষ্ট সৌষ্ঠব ও সৌন্দর্য আছে। কিন্তু এর চোখ ও মুখের গঠন অত্যন্ত অস্বাভাবিক। এই শ্রেণির শিল্পকর্মগুলো পৃথক শ্রেণির বা তৃতীয় শ্রেণিতে অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে। সম্ভবত বাংলার প্রাচীন শিল্প ও গুপ্ত যুগের নতুন আদর্শের সংমিশ্রণের ফলশ্রুতিতে তৃতীয় ধারার উৎপত্তি হয়।
পাহাড়পুর মহাবিহারে প্রাপ্ত পোড়ামাটির ফলকচিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্যে হলো, রাজকীয় আড়ম্বরপূর্ণ সূক্ষ্ম শিল্পবোধ অপেক্ষা লোকচরিত্র চিত্রণ। বৈচিত্রপূর্ণ এই শিল্পকর্মের উপজীব্য হয়েছে প্রকৃতি ও মানুষ। গতিবেগে এবং সম্ভব অসম্ভব সকল ভঙ্গিতেই শিল্পায়িত হয়ে এক অপূর্ব মহত্ব লাভ করেছে।
সেই বারশত বছর আগে গ্রামীণ ভাষ্করা (মৃৎ শিল্পীরা) পুকুরের বা নদীর সহজ এঁটেল মাটি দিয়েই তাঁদের শিল্প মানসের রূপ দিতেন। দৈনন্দিন জীবনের দৃশ্যমান সমস্ত অভিজ্ঞতাকেই শিল্পের বিষয়বস্তু করেছেন। ফলকচিত্রে সূক্ষ্ম সৌন্দর্যানুভূতি উচ্চশিল্প প্রাণের ঘাটতি আছে বটে, তবে এই শিল্পে প্রকৃতি, মানুষ ও জীবজন্তুর জীবনালেখ্যের বিমূর্ত শিল্পায়নে শিল্পীর নিবিড় পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার প্রকাশে অপূর্ব নিপুণতাকে অস্বীকার করা যায় না।
সহস্রাধিককাল পরেও পাহাড়পুরের ফলকচিত্রের আবেদন শাশ্বত। সর্বপ্রথম বাংলার নিজস্ব ভাষ্কর্য শিল্পের বৈশিষ্ট্যের পূর্ণ পরিচয় ও স্বাদ এখান থেকেই গ্রহণ করা হয়। এসকল ফলকচিত্রের মাধ্যমে আবিষ্কার করা যায় আবহমান বাংলাকে; বাঙালি সমাজকে। চিরায়ত লোকবাংলার প্রতিচ্ছবি যেন ফুটে রয়েছে পাহাড়পুরের ফলকচিত্রে। সেখানে নিরবে একাকী হাঁটলে মন নমিত হয়ে আসে আমাদের পূর্ব পুরুষদের সৃজিত কীর্তির অমরত্ব দেখে।
লেখক : উপ-রেজিস্ট্রার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ

Categories