সাহাদুল ইসলাম, মান্দা:
মান্দা উপজেলায় বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠে এখন হলুদের ঢেউ। সরিষার এই ফলনে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের আভা ফুটে উঠেছে। চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনুকূল আবহাওয়া আর যথাযথ পরিচর্চার কারণে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঘ মাসের শেষ দিকে ও ফাল্গুনের শুরুতে ক্ষেত থেকে সরিষা তোলা শুরু হবে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষার উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় এবং গত কয়েক বছর ধরে বাজারে সরিষার ভালো দাম থাকায় চাষিরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
নওগাঁ জেলার ১১টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সরিষা চাষ হয়েছে মান্দা উপজেলায়। মান্দায় ৬ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এরপরে পত্নীতলা উপজেলায় চাষ হয়েছে ৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে, নিয়ামতপুরে ৩ হাজার ৫৩০ হেক্টর, আত্রাই উপজেলায় ৩ হাজার হেক্টর, সাপাহারে ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর, পোরশা উপজেলায় ২ হাজার ৫০ হেক্টর, রাণীনগরে ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর, ধামইরহাটে ১ হাজার ৩৯০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ১ হাজার ৭৫ হেক্টর, সদর উপজেলায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর ও বদলগাছী উপজেলায় ৭২০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষকেরা সাধারণত ছয়টি জাতের সরিষা আবাদ করে থাকে। সেগুলো হচ্ছে উচ্চফলনশীল (উফশী) সরিষা বারী-৯, বারী-১৪, বারী-১৫, এসএম -৭৫, টরি-৭ ও সম্পদ জাতের সরিষা।
মান্দায় ১৪নং বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের চাষিরা সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছে। খোর্দ্দ বান্দাই খাড়া গ্রামের কৃষক স্বপন আলী বলেন, ‘হামার চার বিঘা জমি আছে। নভেম্বর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ওই জমিত পানি জমে ছিল, তাই ধান আবাদ করতে পারিনি। ওই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পানি শুকে যাবার পর সেই জমিত সরিষার বীজ ফেলে দেই। খুব বেশি খরচ হয়নি। তারপরও সরিষা গাছত ভালো ফুল ধরিছে। আশা করিচ্ছি, ফলনও ভালো হবে।’
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ফারুক বলেন, ‘এ অঞ্চলের মাটি সরিষা চাষের উপযোগী হওয়ায় দিন দিন আবাদ বাড়ছে। গত বছর এ উপজেলায় ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার ৭০০ হেক্টর বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এবার সরিষার উৎপাদনও বাড়বে।’