অনলাইন ডেস্ক:
কৃষি ও বনাঞ্চল অধ্যুষিত কমলগঞ্জে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে কয়েকটি ভাটায় ইট পোড়ানো চলছে। ইটভাটার ধোঁয়ায় গিলে খাচ্ছে বিদ্যালয়গুলো। এতে ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও উপজেলার ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, হাটবাজার ও কৃষিজমির ওপর ইটের ভাটা রয়েছে। ভাটার আগুনে পুড়ছে উর্বর মাটি।
জানা গেছে, উপজেলার আলীনগরের জালালিয়া এলাকায় বেগম জেবুন্নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন পর্যন্ত মহসিন ব্রিকসের ভাটায় ইট পোড়ানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশুদের জন্য এটি মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। এদিকে মুন্সীবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় এবং সাজেদা বারি কিন্ডার গার্টেন স্কুল ও মুন্সীবাজার হাটের পার্শ্ববর্তী কৃষিজমির ওপর রয়েছে ইটভাটা। পতনউষারে আবুল ফজল উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার কাছে রয়েছে ইব্রাহিম ব্রিকস। এছাড়াও উপজেলার ফসলি জমিতে রয়েছে আরো কয়েকটি ইটভাটা। বিদ্যালয় ঘেঁষা ইটভাটাসমূহের প্রায় ১০ সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর ছাড়াও হাটবাজার, লোকালয়ের কয়েক হাজার বাসিন্দা ভাটার ধোঁয়ার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
এর মধ্যে মেসার্স মহসিন ব্রিকস, ইব্রাহিম ব্রিকস ও সাবারি ব্রিকস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ১০০ মিটারের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে। পলাশ ব্রিকস ও এমএমবি ব্রিকস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে স্থাপন করে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের বিধিবিধানের কোনো বালাই নেই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাহাড়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। এছাড়াও কৃষিজমিতে ইটভাটা তৈরির আইনগত নিষেধ থাকলেও কৃষিজমি, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বনাঞ্চলের পার্শ্ববর্তী বিভিন্নস্থানে অপরিকল্পিতভাবে এসব ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলার সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা বলেন, কমলগঞ্জে ইব্রাহিম, সাবারি, এমএমবি এবং মেসার্স মহসিন ব্রিকসের পরিবেশগত ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। গত বছর মহসিন ব্রিকসের পরিবেশগত ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন সময় ইটভাটার মালিককে জরিমানা করা হয়েছে। কেউ যদি পরিবেশ ছাড়পত্র না পেয়ে ইটভাটার কার্যক্রম পরিচালনা করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা লোকালয়ের পাশে ইটভাটার ফলে শ্বাসকষ্ট, কাশি, এলার্জি, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন ধরনের রোগ বিস্তারের সম্ভাবনা রয়েছে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, অনেক আগে থেকেই ইটভাটাগুলো গড়ে উঠেছে। তবে এসব বিষয়ে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।