• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন
  • Bengali Bengali English English
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা অনুদান পাবেন ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত, আবেদন যেভাবে চার বিভাগে হিট অ্যালার্ট জারি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ ফের হিট অ্যালার্ট জারি হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু পরিবর্তন আসছে নতুন শিক্ষাক্রম মূল্যায়ন পদ্ধতিতে তাপপ্রবাহ নিয়ে যে নতুন তথ্য দিল আবহাওয়া অফিস একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু ২৬ মে ৫৮টি বিমা কোম্পানির মধ্যে ৪৭টির দামই বেড়েছে শনিবারের ক্লাস প্রসঙ্গে যে কথা জানালেন শিক্ষামন্ত্রী এসএসসির ফল প্রকাশ, পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ বিশ্ব মা দিবস আজ স্কুল-কলেজের সভাপতি হতে লাগবে এইচএসসি পাস উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী যারা নানা আয়োজনে আত্রাইয়ে বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন

হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি

প্রজন্মের আলো / ২৪৩ শেয়ার
Update রবিবার, ৬ জুন, ২০২১

অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান:

হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি। শুধু তাই নয়, কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে গরুর গাড়ি নামক শব্দটিও।

ইট পাথরের মতো মানুষও হয়ে পড়ছে যান্ত্রিক। মানুষ তার নিজস্ব ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে তারই ধারাবাহিকতায় হারিয়ে যাওয়ার পথে এক সময়ের যোগাযোগের প্রধান অবলম্বন গরুর গাড়ি।

‘গ্রামের পথে গরুর গাড়ি, বউ চলেছে শ্বশুর বাড়ি’ এ কবিতার লাইনটি এক সময় বাস্তব ছিল। কিন্তু এমন দৃশ্য এখন অবাস্তব ব্যাপার।  গ্রামে-গঞ্জে এখন এমন গরুর গাড়ির দেখা পাওয়া দুষ্কর।

পায়ে হাঁটা যুগের অবসান হওয়ার পর মানুষ যখন পশুকে যোগাযোগের মাধ্যমে হিসাবে ব্যবহার করতে শিখলো তখন গরুর গাড়িই হয়ে উঠেছিল স্থল পথের যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনের প্রধান মাধ্যমে। পণ্য পরিবহনের পাশাপাশি বিবাহের বর-কনে বহনের ক্ষেত্রেও গরুর গাড়ির কোনো বিকল্প ছিল না। কিন্তু কালের বিবর্তনে এই গরুর গাড়ি আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে। স্থানভেদে কিছু কিছু জায়গায় পণ্য পরিবহনের জন্য গরুর গাড়ি ব্যবহার করা হলেও বিবাহের বর-কনের পরিবহনের জন্য গরুর-গাড়ির কথা যেন আর চিন্তাই করা যায় না।

এক সময় গ্রামবাংলায় কৃষকের বাড়ি বাড়ি শোভা পেত নানা ডিজাইনের গরুর গাড়ি। গরুর গাড়িতে টোপর দিয়ে মানুষ এক স্থান থেকে অন্যস্থানে চলাচল করতো। টোপরবিহীন গরুর গাড়ি ব্যবহার হতো মালামাল পরিবহন, ব্যবসা, ফসল ঘরে তোলা বা বাজারজাতকরণের জন্য।

যান্ত্রিক আবিস্কার ও কৃষকদের মাঝে প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগার কারণে গরুর গাড়ির স্থান দখল করে নিয়েছে ভ্যান, বাস, অটোরিকশা, নছিমন, করিমন, ভটভটি ইত্যাদি। কৃষকসহ সর্ব শ্রেণির মানুষ এখন যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনের জন্য এ সকল যান্ত্রিক পরিবহনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এখন আর গ্রামগঞ্জে আগের মতো গরুর গাড়ি চোখে পড়ে না।

সারাদেশ থেকে যখন গরুর গাড়ি হারিয়ে যাওয়ার পথে তখনও উত্তরাঞ্চলের নওগাঁ জেলার প্রত্যন্ত পোরশা ও সাপাহার উপজেলার বরেন্দ্র এলাকা ভাটি অঞ্চল আত্রাই রাণীনগরসহ মহাদেবপুর উপজেলার কিছু কিছু এলাকার কৃষকরা পণ্য পরিবহণের জন্য এখনও গরুর গাড়ি ব্যবহার করছেন।

সম্প্রতি  গ্রামের রাস্তা দিয়ে গরুর গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় কথা হয় দুইজন গাড়িয়ালের সাথে। তারা জানান, সব রাস্তাঘাট পাকা হওয়ার কারণে গরুর গাড়ি আর চালানো সম্ভব হয় না। তবে মাঠ থেকে ধান আনার ক্ষেত্রে বা গ্রামের দুর্গম এলাকায় ও রাস্তা ঘাট ভালো না থাকায় গরুর গাড়ি ছাড়া এখান থেকে জিনিসপত্র আনা নেয়া করা সম্ভব হয় না। এ কারণে গরুর গাড়ির ওপরই তাদের ভরসা।

নওগাঁর একুশে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মেহমুদ মোস্তফা রাসেল জানান, গরুর গাড়ি ঐতিহ্যবাহী বাহন ছিল। এই গাড়ি দিয়ে আগের মানুষ যাতায়াতসহ বিভিন্ন কাজ করতেন। আগের অনেক ঐতিহ্য ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এখন মানুষ গরু-মহিষের গাড়ি ব্যবহার করার চেয়ে ইঞ্জিন চালিত গাড়ি বেশি ব্যবহার করেন।

গ্রাম বাংলা থেকে গরুর গাড়ি হারিয়ে যাওয়ায় এসব অনুভূতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বর্তমান যুগের ছেলেমেয়েরা। আধুনিকতার প্রবাহে ইতিহাস-ঐতিহ্যের অনেক কিছু আমরা হারাচ্ছি। আমাদের জীবন থেকে হারাচ্ছে এ রকম নানা ঐতিহ্য।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও সংবাদ

Categories