দেশের চাহিদা অনুসারে সরু ও চিকন (প্রিমিয়াম কোয়ালিটি) চাল অপ্রতুল। বিদেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যে বিনার উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগ বিনাধান-২৫ উদ্ভাবন করেছে। আর এটি আবিস্কার/উদ্ভাবন করেছেন ড. সাকিনা খানম (বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী )। ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর বিনাধান-২৫ জাত অবমুক্ত করা হয়।
বিনাধান-২৫-এর গবেষক ড. সাকিনা খানম বলেন, আট বছর গবেষণার পর এই সাফল্য এসেছে। বিনাধান-২৫ মূলত ব্রি ধান-২৯। জাপানের একটি ল্যাবে ৪০ গ্রে মাত্রার কার্বন আয়রন রশ্মি প্রয়োগ করে এ জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে, যা চেকজাত ব্রি ধান ৫০ থেকে ১০ শতাংশ ফলন বেশি দিতে সক্ষম। প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই ধান আগাম পাকে। চাষাবাদের ১৩৮-১৪৮ দিনেই এই ধান খেত থেকে সংগ্রহ করা যায়। ধানের গড় ফলন হেক্টরপ্রতি সাড়ে ৭ থেকে সাড়ে ৮ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে উদ্ভাবিত ধানের জাতের মধ্যে বিনাধান-২৫ সর্বাধিক লম্বা ও সরু আকৃতির।
ঐ কর্মকর্তা আরো বলেন, এই ধানে রোগ ও পোকার আক্রমণ নেই বললেই চলে। এ ধান চাষে পানি কম লাগে। ইউরিয়া সার সাশ্রয়ী। এজন্য বিনাধান-২৫কে ইউরিয়া, পানি ও বালাইনাশক সাশ্রয়ী জাত বলা যায়। ধানের গাছ লম্বা বেশি। তাই কৃষক প্রচুর খড় পাবেন।
বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত বিনার বিজ্ঞানীরা ২৬টি ধানের জাত আবিষ্কার করেছেন। এর মধ্যে বিনা ধান-২৫ অতি লম্বা ও সবচেয়ে সরু ধানের জাত। বিশেষ করে এ জাতটি বিদেশে রপ্তানিযোগ্য প্রিমিয়াম কোয়ালিটির চাল দেবে। বিনার প্রধান আরো বলেন, আমরা কৃষিকে বাণিজ্যিকীকরণ, রপ্তানিমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর করব। আমদানিনির্ভরতা কমাতে ও কৃষকের আয় দ্বিগুণ করে দিতে চাই। সেই জায়গায় বিনাধান-২৫ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমরা গোপালগঞ্জের ২ হাজার কৃষককে দিয়ে আগামী বোরো মৌসুমে এই ধানের আবাদ করাব। সেই ভাবেই আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।